সমাস চেনার সহজ উপায়ঃ

সমাস চেনার সহজ উপায়ঃ
স্কুলে যখন ‘সমাস ‘ পড়ানো হত, তখন স্যারেরা একটু দুষ্টুমী করেই বলতেন ‘সমাস ‘ শিখতে নাকি ছয় মাস লাগে। যদিও কথাটি দুষ্টামীর ছলে বলা কিন্তু কথাটি একটু বেশিই সত্যিই। ৬ মাস তো দূরে থাক 4 বছরেও শিখা হলো না কোনটা কোন সমাস।
,
দ্বিগু সমাস কিভাবে চিনবেন জানেন? আচ্ছা, দ্বিগু শব্দের “দ্বি ” মানে কী? দ্বিতীয় শব্দে “দ্বি ” আছে না? আমরা ২ বুঝাতে “দ্বি ” শব্দটি ব্যবহার করি। ২ মানে কী? একটি সংখ্যা। তাহলে যে শব্দে সংখ্যা প্রকাশ পাবে এখন থেকে সেটাকেই “দ্বিগু ” সমাস বলে ধরে নিবেন। যেমন পরীক্ষায় আসলো শতাব্দী কোন সমাস? আচ্ছা শতাব্দী মানে হল শত অব্দের সমাহার। অর্থাৎ প্রথমেই আছে “শত ” মানে একশ, যা একটি সংখ্যা। সুতরাং এটি দ্বিগু সমাস। একইভাবে ত্রিপদী ( তিন পদের সমাহার)এটি ও দ্বিগু সমাস। কারণ এখানে ও একটি সংখ্যা (৩) আছে। এবার যেকোন ব্যাকরণ বই নিয়ে দ্বিগু সমাসের যত উদাহরন আছে সব এই সুত্রের সাহায্যে মিলিয়ে নিন।
সমাস চেনার সহজ উপায়ঃ

,
এবার আসুন কর্মধারয় সমাসে। খুব বেশি আসে পরীক্ষায় এখান থেকে। কর্মধারয় সমাসে “যে /যিনি/যারা ” এই শব্দগুলো থাকবেই। যেমন: চালাকচতুর – এটি কোন সমাস? চালাকচতুর মানে ‘যে চালাক সে চতুর ‘ তাহলে এখানে ‘যে ‘ কথাটি আছে,অতএব এটি কর্মধারয় সমাস। তবে কর্মধারয় সমাস ৪ প্রকার আছে। মুলত এই ৪ প্রকার থেকেই প্রশ্ন বেশি হয়। প্রথমেই আসুম মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস চিনি। নামটা খেয়াল করুন, মধ্যপদলোপী। মানে মধ্যপদ অর্থাৎ মাঝখানের পদটা লোপ পাবে মানে চলে যাবে। সহজ করে বললে হয়, যেখানে মাঝখানের পদটা চলে যায় সেটিই মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস। যেমনঃ সিংহাসন -কোন সমাস? সিংহাসন মানে ‘সিংহ চিহ্নিত যে আসন ‘। তাহলে দেখুন এখানে ‘সিংহ চিহ্নিত যে আসন ‘ বাক্যটি থেকে মাঝখানের “চিহ্নিত ” শব্দটি বাদ দিলে অর্থাৎ মধ্যপদ “চিহ্নিত ” শব্দটি লোপ পেলে হয় “সিংহাসন “। যেহেতু মধ্যপদলোপ পেয়েছে, অতএব এটি মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস।
উপমান কর্মধারয় সমাস কিভাবে চিনবেন জানেন? যদি ২টি শব্দ তুলনা করা যায় তবে সেটি হবে উপমান কর্মধারয় সমাস। যেমনঃ তুষারশুভ্র – কোন সমাসের উদাহরন? এটি পরীক্ষায় অনেকবার এসেছে। শব্দটি খেয়াল করুন “তুষারশুভ্র “। তুষার মানে বরফ, আর শুভ্র মানে সাদা। বরফ তো দেখতে সাদা। তাহলে তো এটি তুলনা করা যায়। অতএব এটি উপমান কর্মধারয়। একইভাবে “কাজলকালো “এটিও উপমান কর্মধারয় সমাস। কারণ কাজল দেখতে তো কালো রঙেরই হয়। তার মানে তুলনা করা যাচ্ছে। অতএব এটি উপমান কর্মধারয়।
এটি অন্যভাবে ও মনে রাখা যায়। উপমান মানে Noun + Adjective. যেমন তুষারশুভ্র শব্দটির তুষার মানে বরফ হল Noun, আর শুভ্র মানে সাদা হল Adjective। কাজলকালো শব্দটির কাজল হল Noun, এবং কালো হল Adjective। অতএব Noun + Adjective = উপমান কর্মধারয় সমাস।
উপমিত কর্মধারয় মানে যেটা তুলনা করা যাবে না। বিগত বছরের একটি প্রশ্ন ছিল :সিংহপুরুষ – কোন সমাসের উদাহরণ? খেয়াল করুন শব্দটি। সিংহপুরুষ মানে সিংহ আর পুরুষ। আচ্ছা সিংহ কি কখনো পুরুষ হতে পারে নাকি পুরুষ কখনো সিংহ হতে পারে? একটা মানুষ আর অন্যটা জন্তু, কেউ কারো মত হতে পারেনা। অর্থাৎ তুলনা করা যাচ্ছে না। তার মানে যেহেতু তুলনা করা যাচ্ছেনা, অতএব এটি উপমিত কর্মধারয় সমাস। চন্দ্রমুখ শব্দটি কোন সমাস? খেয়াল করুন মুখ কি কখনো চাঁদের মত হতে পারে, নাকি চাঁদ কখনো মুখের মত হতে পারে? কোনোটাই কোনটার মত হতে পারেনা। অর্থাৎ তুলনা করা যাচ্ছে না। তার মানে যেহেতু তুলনা করা যাচ্ছেনা, অতএব এটি উপমিত কর্মধারয় সমাস।
এটিও অন্যভাবে মনে রাখা যায়। উপমিত মানে Noun+ Noun. যেমন -পুরুষসিংহ শব্দটির পুরুষ ও সিংহ দুটোই Noun। অর্থাৎ Noun+ Noun। একইভাবে চন্দ্রমুখ শব্দটির চন্দ্র ও মুখ দুটিই Noun । অর্থাৎ Noun+ Noun। অতএব । অর্থাৎ Noun+ Noun= উপমিত কর্মধারয় সমাস
বাকি থাকল রুপক কর্মধারয় সমাস। এটিও খুব সোজা। রুপ- কথাটি থাকলেই রুপক কর্মধারয়। যেমনঃ বিষাদসিন্ধু -এটি কোন সমাস? বিষাদসিন্ধু কে বিশ্লেষণ করলে হয় “বিষাদ রুপ সিন্ধু “। যেহেতু এখানে রুপ কথাটি আছে, অতএব এটি রুপক কর্মধারয় সমাস। একইভাবে মনমাঝি -মনরুপ মাঝি, ক্রোধানল -ক্রোধ রুপ অনল, এগুলো ও রুপক কর্মধারয় সমাস, যেহেতু রুপ কথাটা আছে।

Popular posts from this blog

অ্যাডভোকেট হতে হলে বা আইন পেশায় ঢুকতে হলে

All Education Board PSC Result 2017 Published

প্রথম শ্রেণি হতে একাদশ-দাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সমস্ত বই পিডিএফ ডাউনলোড Class One to eleventh-twelfth Class all books PDF download